ছবিঃ দি ডেইলি স্টার
তেলা মাথায় আর কত তেল দেবেন? ছবিঃ লেখক।

জমিদারি বা এলাহীকান্ড আর কাকে বলে! কথিত সমুদ্র বিজয়কে বিশাল অর্জন বিবেচনায় সরকারি দলের একটি তেলবাজ-সুবিধাবাদী সংগঠন তাদের ‘বিশেষ উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে মূল সংগঠনের তত্ববধানে প্রধানমন্ত্রীকে কাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দলীয় গন-সংবর্ধনা (তৈল-মর্দন) দেবে।

এই মহান কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে  গত কয়েকদিন ধরে প্রিমিয়ার ডিভিশন ফুটবল লীগ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। এর স্টেডিয়ামের ১০-কোটি টাকা মূল্যের এথলেটিক ট্র্যাকের উপর বানানো হচ্ছে স্টেজ, তাছাড়া প্রায় পুরো মাঠ জুড়ে পোঁতা হয়েছে বাঁশ। এ এক লঙ্কাকান্ড!!!

জানা যায়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এই অনুষ্ঠানের জন্য মাঠ বরাদ্দ দিয়েছে ১দিনের। এর তার আগেই যুবলীগের দামাল ছেলেরা অনানুষ্ঠানিকভাবে খেলা বন্ধ করে দিতে বলেছে। প্রধানমন্ত্রীর ছোটভাই-গোত্রীয় যুবলীগাররা চেয়েছে এর প্রধানমন্ত্রী নাখোশ হতে পারেন ভেবে কোন কর্মকর্তাই এই ব্যাপারে আওয়াজ তুলছেন না। বাহ।

আর সারা ঢাকা শহর ও দেশের অন্যান্য সবখানে নিজেদের ছবি-নাম ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এতদিনের একমাত্র বুক ফুলিয়ে বলার মত একটা ‘অর্জনকে’বাহবা দিয়ে চলেছেন অনেক দলীর নেতা-কর্মী, সরকারি আমলা, ও সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়িরা।

কারা, কেন, কার টাকায় আইন-কানুনের প্রতি বৃধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব করে বেড়াচ্ছেন, সেটা জনগন কখনো জানতে পারবে বলে মনে হয়না, কিন্তু এসবের সমর্থন না করলে আপনিও যে বিরোধীদল বা যুদ্ধাপরাধী বা দেশের শত্রু বলে ঘোষিত হতে পারেন।

পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে সংসদে আসা দেশের সবচেয়ে পুরানো রাজনৈতিক দলের যদি এই অবস্থা হয়, তবে আগের তত্বাবধায়ক-বিএনপি বা এরশাদ চাচা কি দোষ করলো? সবাই তো ঢেঁকি, যারা স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।

প্রাসঙ্গিকঃ জানা যায়, এই শালিশ বলুন বা মামলা বাংলাদেশ যে তর্ক করে, বুদ্ধির জোরে বেশি বাগিয়ে আনতে পেরেছে এমনটি নয়। সাধারন নিরপেক্ষ নিয়মেই রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন ট্র্যাইবুন্যাল।

তবে, এটা ঠিক এই রায়ের ফলে বহু বছরের অমিমাংসিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সমাধান হলো।

সরকারি দল আওয়ামী লীগ এই ফলাফলের জন্য নিজেরাই বাহবা দিচ্ছে এর ফলাও করে প্রচার করছে। বিএনপি’র বক্তব্য অনুযায়ি, তারা সেই প্রচারে গা ভাসিয়েছে বলেই খালেদা জিয়া সংসদে সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু তার কয়েকদিন পর প্রধানমন্ত্রী এই রায়কে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমান বিজয়  বলায় বিএনপি এই প্রচারনায় একটি শুভংকরের ফাঁকি খুঁজে পায় এবং দলের মুখপাত্র সেই ধন্যবাদকে ফিরিয়ে ঘরে নিয়ে যান।

তাই বিষয়টা আরো ঘোলা হয়ে যাওয়ায়, এখন আর জনগনের মতামত-দর্শনের কোন গুরুত্ব নেই। এখন এই বলটা নিয়ে মাঠে থাকবেন রাজনৈতিক হর্তা-কর্তারা।

বিএনপি আমলে এই বিষয়ে যতটুকুই বা কাজ হয়েছে তার ছিঁটেফোঁটাও যদি প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলতেন তবে তিনি আরো বেশি ধন্যবাদ পেতেন, জনগনের। আফসোস!

আসিফ নজরুলের বক্তব্য থেকে আরো কিছুটা স্পষ্ট ধারনা করা যায় এই রায় নিয়ে।