ছবিঃ নেওয়াজ মোহাম্মদ রিফাত

গত একবছর ধরে ক্যাম্পাসের হলে থাকতে পারেনি জুবায়ের, কারন সে যে গ্রুপ করতো তারা ক্যাম্পাসে থাকতে পারেনি “ভিসি গ্রুপের” চাপে। ফলে শুধু পরীক্ষা দিতে যেত মার খাওয়ার ভয় সত্ত্বেও।

কিন্তু এবার আর জান বাঁচাতে পারলোনা। বিকেলে শেষ পরীক্ষাটা দিয়ে বের হতেই ভিসি গ্রুপের কর্মীরা ওকে কথা বলবে বলে ডেকে নিয়ে যায় মীর মোশাররফ হলের পেছনে, তারপর কুপিয়ে আর পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। অবস্থা বেগতিক দেখে ফেলে রেখে যায় মেডিকেল সেন্টারে।

তারপর চলে বাঁচানোর বৃথা চেষ্টা–প্রথমে এনাম মেডিকেল আর তারপর ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতাল। গতকাল রাতে ১০ ব্যাগ রক্ত দিয়েও ওকে বাঁচানো গেলনা। ভোর ৫টার দিকে চলে গেল সে।

ডাক্তাররা বললেন জুবায়েরের দুটি পা আর একটি হাত ভেঙ্গে দিয়েছিল পশুগুলো। খুব বাজেভাবে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে ওকে।

প্রতিহিংসার রাজনীতির আরেকটি বলি জুবায়ের। যেখানে নির্দ্বিধায় দোষটা পড়ে ভিসির ঘাড়ে, যিনি ক্যাম্পাসের মাথা হয়েও তার আমলে ঘটে যাওয়া মারামারি, হল দখল, চাঁদাবাজির কোন সুরাহা করতে পারেনি। কয়েকটা নামমাত্র বহিষ্কার ছাড়া কোন বিশেষ উদ্যোগ দেখা যায়নি যা দেখে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল ভয় পেয়ে থামতে পারে।

দোষ পড়ে প্রধানমন্ত্রীর উপরেও কেননা গত সপ্তাহে দেশের নানা জায়গায় ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের পরেও তার বাসায় সেই দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। শাসন না করে বড় বড় উপদেশ দিয়েছেন, যেসব কথা ওরা কোনদিন বুঝবে কিনা সন্দেহ। সেগুলো দেখানোপনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

দোষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আর প্রতিমন্ত্রীর, যারা “কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা” টাইপের কথা বলেন বারবার টিভি ক্যামেরার সামনে। কিন্তু আবার আগলে রাখেন সেসব কুলাঙ্গারদের।

ঘটনাপ্রবাহ প্রায় একই রকম ছিল বিএনপি আমলে যখন ছাত্রদল ছিল ক্যাম্পাসের রাজপুত্র, শুধু লাশ পড়া ছাড়া।